সহজ ভাষায়, কৃত্রিম উপগ্রহ হলো মানুষের তৈরি এমন একটি বস্তু যা কোনো গ্রহ বা উপগ্রহের চারিদিকে নির্দিষ্ট পথে ঘোরে। এটি একটি জটিল যন্ত্র, যা বিভিন্ন অংশ দিয়ে তৈরি। এর মধ্যে থাকে যোগাযোগ ব্যবস্থা, শক্তি সরবরাহকারী সোলার প্যানেল, ক্যামেরা এবং অন্যান্য সেন্সর। এই উপগ্রহগুলো সাধারণত রকেট ব্যবহার করে মহাকাশে পাঠানো হয়।
কৃত্রিম উপগ্রহের প্রধান কাজগুলো হলো:
কৃত্রিম উপগ্রহের ধারণা বহু পুরনো হলেও এর বাস্তবায়ন শুরু হয় বিংশ শতাব্দীতে। ১৯৫৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথম সফলভাবে স্পুটনিক-১ (Sputnik-1) উৎক্ষেপণ করে। এটি ছিল মানব ইতিহাসের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ। এরপর থেকে মহাকাশ গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়।
এরপর থেকে বিভিন্ন দেশ বহু কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করেছে এবং এই প্রযুক্তি আরও উন্নত হয়েছে।
কৃত্রিম উপগ্রহ মূলত নিউটনের গতির সূত্র মেনে চলে। একটি রকেটের মাধ্যমে এটিকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপন করা হয়। এরপর এটি পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ঘুরতে থাকে।
উপগ্রহের মধ্যে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রাংশ, যেমন - ক্যামেরা, সেন্সর, অ্যান্টেনা, ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করে এবং পৃথিবীতে পাঠায়। এই তথ্য বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণ করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেন।
কৃত্রিম উপগ্রহে সৌর প্যানেল ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়, যা এর কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সাহায্য করে। এছাড়াও, উপগ্রহের সঠিক দিক এবং গতিপথ ঠিক রাখার জন্য ছোট ছোট রকেট ব্যবহার করা হয়।
কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি একটি জটিল প্রক্রিয়া। এটি মূলত বিভিন্ন দেশের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা এবং বেসরকারি কোম্পানি দ্বারা তৈরি করা হয়। কিছু উল্লেখযোগ্য সংস্থা হলো:
এই সংস্থাগুলো বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ তৈরি করে এবং সেগুলোকে মহাকাশে স্থাপন করে।
কৃত্রিম উপগ্রহ আধুনিক বিশ্বের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। যোগাযোগ, পর্যবেক্ষণ, নেভিগেশন, সামরিক কার্যকলাপ এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে এর ব্যবহার অপরিহার্য। এই প্রযুক্তি মানবসভ্যতাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতে এর আরও অনেক নতুন ব্যবহার দেখা যাবে।