আজ আমরা এমন একটি জিনিস নিয়ে কথা বলব, যা আপনি প্রতিদিন ব্যবহার করেন, কিন্তু হয়তো কখনও এর গভীরে যাননি। হ্যাঁ, আমি কীবোর্ডের কথা বলছি! আসুন জেনে নেই এই অসাধারণ আবিষ্কারের গল্প।
মজার ব্যাপার জানেন? আজকের যে কীবোর্ড আমরা ব্যবহার করি, তার জন্ম হয়েছে টাইপরাইটার থেকে। ১৮৬৭ সালে ক্রিস্টফার লাথাম শোলস প্রথম সফল টাইপরাইটার তৈরি করেন। তখন কেউ ভাবতেও পারেনি যে এই যন্ত্রটি একদিন বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনপুট ডিভাইস হয়ে উঠবে!
আপনি কি জানেন QWERTY লেআউট কেন তৈরি করা হয়েছিল? টাইপরাইটারের যুগে, লোকজন যখন খুব দ্রুত টাইপ করত, তখন মেটালের কী-গুলো একে অপরের সাথে আটকে যেত। তাই শোলস এমনভাবে কী-গুলো সাজালেন যাতে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত অক্ষরগুলো একে অপরের থেকে দূরে থাকে। অদ্ভুত নয়?
সহজ ভাষায় বলতে গেলে, প্রতিটি কী-তে একটি করে ছোট সুইচ থাকে। আপনি যখন কোনো কী চাপেন, তখন:
১. সুইচটি একটি ইলেকট্রিক সার্কিট সম্পূর্ণ করে
২. কম্পিউটার বুঝতে পারে কোন কী চাপা হয়েছে
৩. সেই অনুযায়ী স্ক্রিনে অক্ষর বা কমান্ড প্রদর্শিত হয়
এটা অনেকটা লাইট সুইচের মতো - আপনি সুইচ টিপলে যেমন লাইট জ্বলে, তেমনি কী চাপলে কম্পিউটার প্রতিক্রিয়া দেখায়।
বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত টাইপিস্ট স্টেলা পাজিওস এক মিনিটে ২১৬ শব্দ টাইপ করতে পারতেন! আপনি কত দ্রুত টাইপ করতে পারেন?
আপনার টাইপিং স্পীড চেক করুন আমাদের Free bangla typing test টুল এর মাধ্যমে।
১৯৬৪ সালে IBM দুনিয়ার প্রথম কম্পিউটার কীবোর্ড বানায়। এটি ছিল IBM 2741 টার্মিনাল - যা আজকের কীবোর্ডের পূর্বপুরুষ।
এগুলো হল সেই কী-গুলো যেখানে অক্ষর এবং সংখ্যা থাকে। বাংলা এবং ইংরেজি দুই ভাষাতেই টাইপ করার জন্য এগুলো ব্যবহার করা হয়।
F1 থেকে F12 - এই কী-গুলো বিশেষ কাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। যেমন F5 দিয়ে ওয়েব পেজ রিফ্রেশ করা যায়।
ডান পাশের সংখ্যার কী-গুলো, যা ক্যালকুলেটরের মতো কাজ করে। হিসাব-নিকাশের জন্য খুবই উপযোগী।
কীবোর্ড শুধু টাইপিং-এর জন্য নয়, এটি আমাদের ডিজিটাল জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ। ভাবুন তো:
এই সবকিছুই কীবোর্ড ছাড়া করা প্রায় অসম্ভব।
এবার আসুন জেনে নেই আধুনিক কীবোর্ড প্রযুক্তি এবং কীভাবে আপনার কীবোর্ড ভালো রাখবেন।
এই কীবোর্ডগুলো গেমার এবং প্রফেশনাল টাইপিস্টদের প্রথম পছন্দ। কেন?
মজার তথ্য: চেরি এমএক্স ব্লু সুইচ ৫ কোটি বার চাপার পর নষ্ট হয়। এর মানে, আপনি প্রতিদিন ১০,০০০ বার চাপলেও এটি ১৩ বছর চলবে!
এগুলো সাধারণত অফিস এবং বাসায় ব্যবহৃত হয়:
আধুনিক ল্যাপটপে এই ধরনের কীবোর্ড দেখা যায়:
তার ছাড়াই কীবোর্ড ব্যবহার করার দুটি প্রধান পদ্ধতি:
১. ব্লুটুথ
২. আরএফ (রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি)
হাত এবং কব্জির স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য বিশেষ ডিজাইন:
১. উল্টো করে ঝাড়ুন
২. নরম ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করুন
১. কী-ক্যাপ পরিষ্কার করা
কিছু জিনিস যা কখনোই করবেন না:
কীবোর্ড প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে। কিন্তু মনে রাখবেন, দামি কীবোর্ড কেনার চেয়ে বেশি জরুরি হল নিয়মিত পরিচর্যা করা। আপনার কীবোর্ডের যত্ন নিন, এটি আপনার ডিজিটাল যাত্রার একজন বিশ্বস্ত সঙ্গী হয়ে থাকবে।