১৬০৮ সালে হল্যান্ডের চশমা নির্মাতা হ্যান্স লিপারশে প্রথম দূরবীনের পেটেন্ট করেন। কিন্তু টেলিস্কোপের প্রকৃত বিপ্লব শুরু হয় গ্যালিলিও গ্যালিলেই-এর হাত ধরে। ১৬০৯ সালে তিনি নিজের হাতে তৈরি টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ পর্যবেক্ষণ শুরু করেন। এই যন্ত্র দিয়ে তিনি চাঁদের পাহাড়-পর্বত, বৃহস্পতির চারটি বড় চাঁদ, এবং ছায়াপথের অসংখ্য তারা আবিষ্কার করেন।
টেলিস্কোপের কাজ খুবই মজার। এটি মূলত দুটি কাজ করে: ১. দূরের বস্তু থেকে আসা আলো সংগ্রह করা ২. সেই আলোকে বড় করে দেখানো
আসুন একটু বিস্তারিত দেখি:
টেলিস্কোপের সামনের বড় লেন্স বা আয়নাকে বলা হয় অবজেকটিভ। এটি যত বড় হবে, তত বেশি আলো সংগ্রহ করতে পারবে। ঠিক যেমন বড় বালতি দিয়ে বেশি বৃষ্টির পানি ধরা যায়। অবজেকটিভ লেন্স বা আয়না এই আলোকে কেন্দ্রীভূত করে একটি বিন্দুতে।
সংগৃহীত আলো আইপিস নামক ছোট লেন্সের মাধ্যমে আমাদের চোখে আসে। এই লেন্স আলোকে বড় করে দেখায়। ফলে আমরা দূরের জিনিস কাছে এবং বড় করে দেখতে পাই।
এটি সবচেয়ে পুরনো ধরনের টেলিস্কোপ। গ্যালিলিও এই ধরনের টেলিস্কোপই ব্যবহার করেছিলেন। এতে লেন্স ব্যবহার করা হয়। লেন্স আলোকে ভেঙ্গে কেন্দ্রীভূত করে।
১৬৮৮ সালে স্যার আইজাক নিউটন এই ধরনের টেলিস্কোপ আविষ্কার করেন। এতে আয়না ব্যবহার করা হয়। আয়না আলোকে প্রতিফলিত করে কেন্দ্রীভূত করে।
এটি আধুনিক টেলিস্কোপ যেখানে লেন্স এবং আয়না দুটোই ব্যবহার করা হয়। এতে দুই প্রকারের সুবিধাই পাওয়া যায়।
১৯৯০ সালে স্থাপিত হাবল টেলিস্কোপ মহাকাশে অবস্থিত প্রথম বড় টেলিস্কোপ। এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাধা ছাড়াই মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করতে পারে। হাবলের মাধ্যমে আমরা:
২০২১ সালে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে এই অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ। এটি ইনফ্রারেড আলোতে পর্যবেক্ষণ করে। ফলে ধূলিকণার আড়াল ভেদ করে দূরের গ্যালাক্সি দেখতে পারে।
টেলিস্কোপের মাউন্ট শুধু যন্ত্রটিকে ধরে রাখে না, এটি একটি জটিল ব্যবস্থা। দুই ধরনের মাউন্ট প্রচলিত:
আল্টাজিমুথ মাউন্ট:
ইকুয়েটোরিয়াল মাউন্ট:
টেলিস্কোপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর বৈশিষ্ট্য:
লেন্স টাইপ অবজেকটিভ:
আয়না টাইপ অবজেকটিভ:
চোখের সাথে সরাসরি সংযুক্ত এই অংশটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ:
বৈশিষ্ট্য:
স্পষ্ট ইমেজ পাওয়ার জন্য এই যন্ত্রাংশ অপরিহার্য:
প্রধান বৈশিষ্ট্য:
মূল টেলিস্কোপের সহায়ক এই ছোট টেলিস্কোপ:
টেলিস্কোপ আমাদের চোখের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনে সাহায্য করছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে টেলিস্কোপের প্রযুক্তিও উন্নত হচ্ছে। আগামী দিনে নতুন নতুন টেলিস্কোপ আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে আরও অজানা তথ্য জানাতে সাহায্য করবে।